Hygiene care
-অর্পিতা বাগচী
“ইস, এতো ভাল শাড়িটা ! কি গো তুমি? একটু নিজেকে সামলাও। এতো বেখেয়ালে হলে চলবে? যাক যা হবার হয়েছে। মন খারাপ ক’রো না। Hygiene care-এ দিয়ে দিও।“
বলে,সোহিনী আর তার একরত্তি মেতে টা টা ক'রে হাঁটি হাঁটি পায়ে চলে গেলো।
সত্যি, কি করে যে করলাম ! আমি? বড্ড আনমনা হয়ে যাচ্ছি আজকাল।
এবার পুজোর সব থেকে ভাল শাড়ি। খুব পছন্দ হয়েছিল। অবশ্য কাঞ্জিভরাম আমার সবসময়ের পছন্দ। Hygiene Care তো আছেই। মনে মনে এই সব ভাবতে ভাবতে রান্নাঘরে চায়ের জল চাপাতে গিয়ে সামনের জানালাতে দেখি, লক্ষ্মী পুজোর চাঁদটা আজ এখনও আসেনি, শীতটা ক্যামন আসছি আসছি করছে, অনেক দিনের পুরনো বন্ধু যেন, আসবো বলেও আসছে না। চারিদিক ক্যামন নিস্তব্ধ, থমথমে।
এ বাবা ! কি যে করছি না আজকাল, ওড়নাতেও! এখনি না ধুলে আর যাবে না। কিন্তু এ কি রে বাবা ! কলতলাতে ওড়না ঘসেই যাচ্ছি আর লাল নীল আরও কতো রঙ বেরিয়েই যাচ্ছে । আর আজ সকালের শাড়িটা? মনে পরা মাত্রই, ঠিক তাই। কিন্তু আমার শাড়িতেই বা ক্যানো? আমি তো সামলেই থাকি। গুছিয়েই রাখি, তা হলে কি করে হল এ্যামন?
“বৌদি, টাকা দাও। বাজারে না গেলে রান্না হবে কি? কিছুই তো নেই গো।”
প্রতিমার ডাকে হুঁশ ফেরে। সত্যি তো কিছুই নেই। সকালেই দেখেছিলাম, কি যে হয়েছে আমার, কিচ্ছু মনে থাকে না।
“দাও, দাও আমার আবার ও বাড়িতে এতো রান্না করতে হবে। বাচ্চাটার জন্মদিন।’’
ওর তাড়া শুনে তাড়াতাড়ি টাকা বার করতে গিয়ে প্রতিমার আঁচল আমার নোয়াতে
আটকালো।
“কি গো আমার আঁচল ছাড়ো, আমার আঁচলে কি খুঁজছো?”
তবু ভাল ওর আঁচলে নেই। কিন্তু আমার আঁচলেই বা কি করে হল?
আলমারি খুলে টাকা বার করছি, আরে এ কি কাণ্ড? প্রতিমা ও প্রতিমা
আমার চিৎকারে ও প্রায় আসতে গিয়ে পড়েই যাচ্ছিল, কোন রকমে নিজেকে সামলে,
“কি গো, কি হল?”
‘‘দ্যাখোনা, দ্যাখো আমি টাকা বার করতে যেই আলমারি খুলেছি আমার সব সবকটা শাড়ি এক এক করে ঘরময় উড়ে যাচ্ছে আর সব শাড়ির আঁচলে দাগ।
কি করে এমন হল প্রতিমা? কি করে! আমি তো গুছিয়েই রাখি, সামলেই থাকি।
তুমি Hygiene care চেনো প্রতিমা? বলো না, চেনো না?’’
“তুমি এমন ক’রো না আর শাড়িগুলো তো ঠিকই আছে, আমি বরং পাশের বাড়ির বউদিকে ডেকে আনি।’’
আমার ঘরে আমাকে একা ক’রে দিয়ে প্রতিমা বেরিয়ে গ্যালো ।
সেই গান আবার, এক গান গত দুদিন ধরে বেজেই চলেছে,
লাগা চুনরিমে দাগ ছুপাঁউ ক্যায়সে? ঘর যাঁউ ক্যায়েসে..